জান্নাতি নারীর গুণাবলী
নারীর জান্নাত যে পথে
প্রেক্ষাপট________________-
চারদিক থেকে ভেসে আসছে নির্দয় ও পাষণ্ড স্বামী নামের হিংস্র পশুগুলোর আক্রমণের
শিকার অসহায় ও অবলা নারীর করুণ বিলাপ। অহরহ ঘটছে দায়ের কোপ, লাথির আঘাত,
অ্যাসিডে ঝলসানো, আগুনে পুড়ানো, বিষ প্রয়োগ এবং বালিশ চাপাসহ নানা দুঃসহ
কায়দায় নারী মৃত্যুর ঘটনা। কারণ তাদের পাঠ্য সূচি থেকে ওঠে গেছে বিশ্ব নবির বাণী“তোমরা নারীদের প্রতি কল্যাণকামী হও।” “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার স্ত্রীরনিকট উত্তম, আমি আমার স্ত্রীদের নিকট উত্তম।”
অপর দিকে চারদিক বিষিয়ে তুলছে, তাগুতি আইনের দোহাই পেড়ে পতিভক্তিশূন্য, মায়া-
ভালোবাসাহীন স্ত্রী নামের ডাইনীগুলোর অবজ্ঞার পাত্র, অসহায় স্বামীর ক্ষোভ ও
ক্রোধে ভরা আর্তনাদ। কারণ, তারা রাসূলের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত “আল্লাহ ব্যতীত কাউকে
সেজদা করার অনুমতি থাকলে, আমি নারীদের নির্দেশ দিতাম তোমরা স্বামীদের সেজদা
কর। ” মান-অভিমানের ছলনা আর সামান্য
তুচ্ছ ঘটনার ফলে সাজানো-গোছানো, সুখের সংসার, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ও তছনছ হয়ে
যাচ্ছে মুহূর্তে। ক্ষণিকেই বিস্মৃতির আস্তাকুরে পর্যবসিত হচ্ছে পূর্বের সব
মিষ্টি-মধুর স্মৃতি, আনন্দঘন-মুহূর্ত। দায়ী কখনো স্বামী, কখনো স্ত্রী। আরো দায়ী
বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বিদ্যমান
ধর্মহীন, পাশ্চাত্যপন্থী সিলেবাস। যা তৈরি করেছে ইংরেজ ও এদেশের এমন
শিক্ষিত সমাজ, যারা রঙে বর্ণে বাঙালী হলেও চিন্তা চেতনা ও মন-মানসিকতায়
ইংরেজ। মায়ের উদর থেকে অসহায় অবস্থায় জন্ম গ্রহণকারী মানুষের তৈরি এ সিলেবাস
অসম্পূর্ণ, যা সর্বক্ষেত্রে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ। যে সিলেবাসে শিক্ষিত হয়ে স্ত্রী স্বামীর অধিকার
সম্পর্কে জানে না, স্বামীও থাকে স্ত্রীর প্রাপ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। একজন অপর
জনের প্রতি থাকে বীতশ্রদ্ধ। ফলে পরস্পরের মাঝে বিরাজ করে সমঝোতা ও
সমন্বয়ের সংকট। সম্পূরকের পরিবর্তে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে একে
অপরকে।
আস্থা রাখতে পারছে না কেউ কারো ওপর। তাই স্বনির্ভরতার জন্য নারী-পুরুষ
সবাই অসম প্রতিযোগিতার ময়দানে ঝাঁপ দিচ্ছে। মূলত হয়ে পড়ছে পরনির্ভর, খাবার-
দাবার, পরিচ্ছন্নতা-পবিত্রতা এবং সন্তান লালন-পালনের ক্ষেত্রেও ঝি-চাকর কিংবা
শিশু আশ্রমের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে…
পক্ষান্তরে আসল শিক্ষা
ও মানব জাতির সঠিক পাথেয় আল-কুরআনের
দিকনির্দেশনা পরিত্যক্ত ও সংকুচিত হয়ে আশ্রয় নিয়েছে কুঁড়ে ঘরে, কর্তৃত্বশূন্য কিছু
মানবের হৃদয়ে। তাই, স্বভাবতই মানব জাতি অন্ধকারাচ্ছন্ন, সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত,
কিংকর্তব্যবিমূঢ় নিজদের সমস্যা নিয়ে। দোদুল্যমান স্বীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে।
আমাদের প্রয়াস এ ক্রান্তিকালে নারী- পুরুষের বিশেষ অধ্যায়, তথা দাম্পত্য জীবনের
জন্য কুরআন-হাদিস সিঞ্চিত একটি আলোকবর্তিকা পেশ করা, যা দাম্পত্য জীবনে
বিশ্বস্ততা ও সহনশীলতার আবহ সৃষ্টি করবে।
কলহ, অসহিষ্ণুতা ও অশান্তি বিদায়
দেবে চিরতরে। উপহার দেবে সুখ ও শান্তিময়
অভিভাবকপূর্ণ নিরাপদ পরিবার।
আল্লাহ
তা’আলা বলেন :
ﺎَﻣَﻭ ٍﻦِﻣْﺆُﻤِﻟ َﻥﺎَﻛ ﺎَﻟَﻭ ٍﺔَﻨِﻣْﺆُﻣ ﺍَﺫِﺇ ﻰَﻀَﻗ
ُﻪَّﻠﻟﺍ ُﻪُﻟﻮُﺳَﺭَﻭ ﺍًﺮْﻣَﺃ ْﻥَﺃ َﻥﻮُﻜَﻳ ُﻢُﻬَﻟ
ُﺓَﺮَﻴِﺨْﻟﺍ ْﻦِﻣ ْﻢِﻫِﺮْﻣَﺃ ْﻦَﻣَﻭ ِﺺْﻌَﻳ َﻪَّﻠﻟﺍ
ُﻪَﻟﻮُﺳَﺭَﻭ ْﺪَﻘَﻓ َّﻞَﺿ ﺎًﻨﻴِﺒُﻣ ﺎًﻟﺎَﻠَﺿ ﴿
ﺏﺍﺰﺣﻷﺍ:৩৬﴾
“আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের
ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে
অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।”[১]
রাসূল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন :
ﻞﻛ ﻥﻮﻠﺧﺪﻳ ﻲﺘﻣﺃ ﺔﻨﺠﻟﺍ ﻻﺇ ﻦﻣ ،ﻰﺑﺃ
ﺍﻮﻟﺎﻗ : ﺎﻳ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ؟ﻰﺑﺄﻳ ﻦﻣﻭ
: ﻝﺎﻗ ﻲﻨﻋﺎﻃﺃ ﻦﻣ ﻞﺧﺩ ،ﺔﻨﺠﻟﺍ ﻦﻣﻭ
ﻲﻧﺎﺼﻋ ﺪﻘﻓ .ﻰﺑﺃ ،ﻱﺭﺎﺨﺒﻟﺍ ﻩﺍﻭﺭ ﺢﺘﻓ
ﻱﺭﺎﺒﻟﺍ (১৩/২৪৯)
“আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে, তবে যে অস্বীকার করবে। সাহাবারা
প্রশ্ন করলেন, কে অস্বীকার করবে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, যে আমার
অনুসরণ করল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হল, সে অস্বীকার করল।”[২]
নারীর উপর পুরুষের কর্তৃত্ব______________
আল্লাহ তাআলা বলেন :
َﻥﻮُﻣﺍَّﻮَﻗ ُﻝﺎَﺟِّﺮﻟﺍ ﻰَﻠَﻋ ِﺀﺎَﺴِّﻨﻟﺍ ﺎَﻤِﺑ
ُﻪَّﻠﻟﺍ َﻞَّﻀَﻓ ْﻢُﻬَﻀْﻌَﺑ ﻰَﻠَﻋ ٍﺾْﻌَﺑ ﺎَﻤِﺑَﻭ
ﺍﻮُﻘَﻔْﻧَﺃ ْﻢِﻬِﻟﺍَﻮْﻣَﺃ ْﻦِﻣ ﺀﺎﺴﻨﻟﺍ﴿ :৩৪﴾
“পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব
দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদথেকে ব্যয় করে।”[৩]
হাফেজ ইবনে কাসির অত্র আয়াতের তাফসিরে বলেন, “পুরুষ নারীর তত্ত্বাবধায়ক। অর্থাৎ
সে তার গার্জিয়ান, অভিভাবক, তার উপর কর্তৃত্বকারী ও তাকে সংশোধনকারী, যদি সে
বিপদগামী বা লাইনচ্যুত হয়।”[৪]
এ ব্যাখ্যা রাসূলের হাদিস দ্বারাও সমর্থিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, আমি যদি আল্লাহ ব্যতীত কাউকে সেজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে নারীদের
আদেশ করতাম স্বামীদের সেজদার করার জন্য। সে আল্লাহর শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার
জীবন, নারী তার স্বামীর সব হক আদায় করা ব্যতীত, আল্লাহর হক আদায়কারী হিসেবে
গণ্য হবে না। এমনকি স্বামী যদি তাকে বাচ্চা প্রসবস্থান থেকে তলব করে, সে তাকে
নিষেধ করবে না।”[৫]
আল্লাহ তা’আলা বলেন :
ﺕﺎﺘﻧﺎﻗ ﺕﺎﺤﻟﺎﺼﻟﺎﻓ ﺐﻴﻐﻠﻟ ﺕﺎﻈﻓﺎﺣ
ﺎﻤﺑ ﻆﻔﺣ .ﻪﻠﻟﺍ ﺀﺎﺴﻨﻟﺍ :৩৪)
“সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযতকারীনী ঐ
বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাজত করেছেন।”[৬]
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ এ আয়াতের তাফসিরে
বলেন, ‘সুতরাং নেককার নারী সে, যে আনুগত্যশীল। অর্থাৎ যে নারী সর্বদা
স্বামীর আনুগত্য করে… নারীর জন্য আল্লাহ এবং তার রাসূলের হকের পর স্বামীর হকের
মত অবশ্য কর্তব্য কোন হক নেই।'[৭]
হে নারীগণ, তোমরা এর প্রতি সজাগ দৃষ্টি
রাখ। বিশেষ করে সে সকল নারী, যারা সীমালঙ্ঘনে অভ্যস্ত, স্বেচ্ছাচার প্রিয়,স্বামীর অবাধ্য ও পুরুষের আকৃতি ধারণ করে। স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের নামে কোন
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, যখন ইচ্ছা বাইরে যাচ্ছে আর ঘরে ফিরছে। যখন যা মন
চাচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। তারাই দুনিয়া এবং দুনিয়ার চাকচিক্যের বিনিময়ে আখেরাত
বিক্রি করে দিয়েছে। হে বোন, সতর্ক হও, চৈতন্যতায় ফিরে আস, তাদের পথ ও সঙ্গ
ত্যাগ করে। তোমার পশ্চাতে এমন দিন ধাবমান যার বিভীষিকা বাচ্চাদের পৌঁছে
দিবে বার্ধক্যে।
নারীদের উপর পুরুষের কর্তৃত্বের কারণ :_________
পুরুষরা নারীদের অভিভাবক ও তাদের উপর কর্তৃত্বশীল। যার মূল কারণ উভয়ের
শারীরিক গঠন, প্রাকৃতিক স্বভাব, যোগ্যতা ও শক্তির পার্থক্য। আল্লাহ তা’আলা নারী-
পুরুষকে ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য এবং ভিন্ন ভিন্ন রূপ ও অবয়বে সৃষ্টি করেছেন।
দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ নেককার স্ত্রী
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
“পুরো দুনিয়া ভোগের সামগ্রী, আর সবচে’ উপভোগ্য সম্পদ হল নেককার নারী।”[৮]
বুখারি ও মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহ
আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“চারটি গুণ দেখে নারীদের বিবাহ করা হয়-
সম্পদ, বংশ মর্যাদা, সৌন্দর্য ও দীনদারি।
তবে ধার্মিকতার দিক প্রাধান্য দিয়েই তুমি কামিয়াব হও নয়তো তোমার হাত ধুলি
ধুসরিত হবে।”[৯]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
“চারটি বস্তু শুভ লক্ষণ। যথা :
১. নেককার নারী,
২. প্রশস্ত ঘর,
৩. সৎ প্রতিবেশী,
৪. সহজ প্রকৃতির আনুগত্যশীল-পোষ্য
বাহন।
পক্ষান্তরে অপর চারটি বস্তু কুলক্ষণা। তার
মধ্যে একজন বদকার নারী।”[১০]
এসব আয়াত ও হাদিস পুরুষদের যেমন নেককার
নারী গ্রহণ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, তেমনি উৎসাহ দেয় নারীদেরকে আদর্শ
নারীর সকল গুনাবলী অর্জনের প্রতি। যাতে তারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় নেককার নারী
হিসেবে গণ্য হতে পারে।
প্রিয় মুসলিম বোন, তোমার সামনে সে
উদ্দেশেই নেককার নারীদের গুণাবলী পেশ করা হচ্ছে। যা চয়ন করা হয়েছে কুরআন, হাদিস ওপথিকৃৎ আদর্শবান নেককার আলেমদের বাণী ও উপদেশ থেকে। তুমি এগুলো শিখার ব্রত
গ্রহণ কর। সঠিক রূপে এর অনুশীলন আরম্ভ
কর।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, “ইলম আসে শিক্ষার
মাধ্যমে। শিষ্টচার আসে সহনশীলতার
মাধ্যমে। যে কল্যাণ অনুসন্ধান করে, আল্লাহ
তাকে সুপথ দেখান।”[১১]
নেককার নারীর গুণাবলি_______________-
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
ﺕﺎﺘﻧﺎﻗ ﺕﺎﺤﻟﺎﺼﻟﺎﻓ ﺐﻴﻐﻠﻟ ﺕﺎﻈﻓﺎﺣ
ﺎﻤﺑ ﻆﻔﺣ .ﻪﻠﻟﺍ ﺀﺎﺴﻨﻟﺍ :৩৪)
ইবনে কাসির রহ. লিখেন,ﺕﺎﺤﻟﺎﺼﻟﺎﻓ
শব্দের অর্থ নেককার নারী, ইবনে আব্বাস ও অন্যান্য মুফাসসিরের মতে ﺕﺎﺘﻧﺎﻗ শব্দের
অর্থ স্বামীদের আনুগত্যশীল নারী, আল্লামা সুদ্দি ও অন্যান্য মুফাসসির বলেন ﺕﺎﻈﻓﺎﺣ
ﺐﻴﻐﻠﻟ শব্দের অর্থ স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের সতীত্ব ও স্বামীর সম্পদ রক্ষাকারী
নারী।”[১২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, আপন লজ্জাস্থান হেফাজত করে
এবং স্বামীর আনুগত্য করে তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।
“[১৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“তোমাদের সেসব স্ত্রী জান্নাতি, যারা মমতাময়ী, অধিক সন্তান প্রসবকারী, পতি-
সঙ্গ প্রিয়- যে স্বামী গোস্বা করলে সে তার হাতে হাত রেখে বলে, আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া
পর্যন্ত, আমি দুনিয়ার কোন স্বাদ গ্রহণ করব না।”[১৪]
সুনানে নাসায়িতে আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহ
আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে একদা জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল, কোন নারী সব চেয়ে ভাল?
তিনি বললেন, “যে নারী স্বামীকে আনন্দিত করে, যখন স্বামী তার দিকে দৃষ্টি দেয়। যে
নারী স্বামীর আনুগত্য করে, যখন স্বামী তাকে নির্দেশ দেয়, যে নারী স্বামীর সম্পদ
ও নিজ নফসের ব্যাপারে, এমন কোনো কর্মে লিপ্ত হয় না, যা স্বামীর অপছন্দ।”[১৫]
হে মুসলিম নারী, নিজকে একবার পরখ কর,
ভেবে দেখ এর সাথে তোমার মিল আছে কতটুকু।
আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার পথ অনুসরণ কর। দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ অর্জনের শপথ
গ্রহণ কর। নিজ স্বামী ও সন্তানের ব্যাপারে যত্নশীল হও।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার
কি স্বামী আছে? সে বলল হ্যাঁ, রাসূল বললেন,
তুমি তার কাছে কেমন? সে বলল, আমি তার সন্তুষ্টি অর্জনে কোন ত্রুটি করি না, তবে
আমার সাধ্যের বাইরে হলে ভিন্ন কথা। রাসূল বললেন, লক্ষ্য রেখ, সে-ই তোমার জান্নাত বা
জাহান্নাম।”[১৬]
উপরের আলোচনার আলোকে নেককার নারীর
গুণাবলি :______________
১. নেককার : ভাল কাজ সম্পাদনকারী ও নিজ
রবের হক আদায়কারী নারী।
২. আনুগত্যশীল : বৈধ কাজে স্বামীর
আনুগত্যশীল নারী।
৩. সতী : নিজ নফসের হেফাজতকারী নারী,
বিশেষ করে স্বামীর অবর্তমানে।
৪. হেফাজতকারী : স্বামীর সম্পদ ও নিজ
সন্তান হেফাজতকারী নারী।
৫. আগ্রহী : স্বামীর পছন্দের পোশাক ও সাজ
গ্রহণে আগ্রহী নারী।
৬. সচেষ্ট : স্বামীর গোস্বা নিবারণে
সচেষ্ট নারী। কারণ হাদিসে এসেছে, স্বামী
নারীর জান্নাত বা জাহান্নাম।
৭. সচেতন : স্বামীর চাহিদার প্রতি সচেতন
নারী। স্বামীর বাসনা পূর্ণকারী।
যে নারীর মধ্যে এসব গুণ বিদ্যমান, সে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের ভাষ্য মতে জান্নাতী। তিনি
বলেছেন, “যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে,
রমজানের রোজা রাখে, নিজ সতীত্ব হেফাজত
করে ও স্বামীর আনুগত্য করে, তাকে বলা হবে,
যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে জান্নাতে প্রবেশ কর।
“[১৭]
আনুগত্যপরায়ন নেককার নারীর উদাহরণ
শাবি বর্ণনা করেন, একদিন আমাকে শুরাই বলেন, “শাবি, তুমি তামিম বংশের মেয়েদের
বিয়ে কর। তামিম বংশের মেয়েরা খুব বুদ্ধিমতী। আমি বললাম, আপনি কীভাবে
জানেন তারা বুদ্ধিমতী? তিনি বললেন, আমি কোনো জানাজা থেকে বাড়ি ফিরছিলাম, পথের
পাশেই ছিল তাদের কারো বাড়ি। লক্ষ্য করলাম, জনৈক বৃদ্ধ মহিলা একটি ঘরের
দরজায় বসে আছে, তার পাশেই রয়েছে সুন্দরী এক যুবতী। মনে হল, এমন রূপসী মেয়ে আমি
আর কখনো দেখিনি। আমাকে দেখে মেয়েটি কেটে পড়ল। আমি পানি চাইলাম, অথচ আমার
তৃষ্ণা ছিল না। সে বলল, তুমি কেমন পানি পছন্দ কর, আমি বললাম যা উপস্থিত আছে।
মহিলা মেয়েকে ডেকে বলল, দুধ নিয়ে আস, মনে হচ্ছে সে বহিরাগত। আমি বললাম, এ মেয়ে
কে? সে বলল, জারিরের মেয়ে জয়নব। হানজালা
বংশের ও। বললাম, বিবাহিতা না
অবিবাহিতা? সে বলল, না, অবিবাহিতা। আমি
বললাম, আমার কাছে তাকে বিয়ে দিয়ে দাও। সে বলল, তুমি যদি তার কুফু হও, দিতে পারি।
আমি বাড়িতে পৌঁছে দুপুরে সামান্য বিশ্রাম
নিতে শোবার ঘরে গেলাম, কোনো মতে চোখে ঘুম ধরল না। জোহর নামাজ পড়লাম। অতঃপর
আমার গণ্যমান্য কয়েকজন বন্ধু, যেমন- আলকামা, আসওয়াদ, মুসাইয়্যেব এবং মুসা ইবনে
আরফাতাকে সাথে করে মেয়ের চাচার বাড়িতে গেলাম। সে আমাদের সাদরে গ্রহণ করল।
অতঃপর বলল, আবু উমাইয়্যা, কি উদ্দেশ্যে
আসা? আমি বললাম, আপনার ভাতিজি জয়নবের উদ্দেশ্যে। সে বলল, তোমার ব্যাপারে তার
কোন আগ্রহ নেই! অতঃপর সে আমার কাছে তাকে বিয়ে দিল। মেয়েটি আমার জালে আবদ্ধ
হয়ে খুবই লজ্জা বোধ করল। আমি বললাম,
আমি তামিম বংশের নারীদের কী সর্বনাশ করেছি? তারা কেন আমার উপর অসন্তুষ্ট?
পরক্ষণই তাদের কঠোর স্বভাবের কথা আমার
মনে পড়ল। ভাবলাম, তালাক দিয়ে দেব। পুনরায় ভাবলাম, না, আমিই তাকে আপন করে
নিব। যদি আমার মনপুত হয়, ভাল, অন্যথায় তালাকই দিয়ে দেব। শাবি, সে রাতের
মুহূর্তগুলো এতো আনন্দের ছিল, যা ভোগ না
করলে অনুধাবন করার জো নেই। খুবই চমৎকার ছিল সে সময়টা, যখন তামিম বংশের মেয়েরা
তাকে নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমার মনে পড়ল, রাসূলের সুন্নতের কথা। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“স্ত্রী প্রথম ঘরে প্রবেশ করলে স্বামীর
কর্তব্য, দু’রাকাত নামাজ পড়া, স্ত্রীর মধ্যে
সুপ্ত মঙ্গল কামনা করা এবং তার মধ্যে লুকিত
অমঙ্গল থেকে পানাহ চাওয়া।” আমি নামাজশেষে পিছনে তাকিয়ে দেখলাম, সে আমার সাথে
নামাজ পড়ছে। যখন নামাজ শেষ করলাম,
মেয়েরা আমার কাছে উপস্থিত হল। আমার কাপড় পালটে সুগন্ধি মাখা কম্বল আমার উপর
টেনে দিল। যখন সবাই চলে গেল, আমি তার নিকটবর্তী হলাম ও তার শরীরের এক পাশে
হাত বাড়ালাম। সে বলল, আবু উমাইয়্যা, রাখ।
অতঃপর বলল,
ﺪﻤﺤﻟﺍ ،ﻪﻠﻟ ﻩﺪﻤﺣﺃ ﻭ ،ﻪﻨﻴﻌﺘﺳﺃ
ﻲﻠﺻﺃﻭ ﻰﻠﻋ ﺪﻤﺤﻣ ﻪﻟﺁﻭ …
“আমি একজন অভিজ্ঞতা শূন্য অপরিচিত নারী। তোমার পছন্দ অপছন্দ আর স্বভাব
রীতির ব্যাপারে কিছুই জানি না আমি। আরো বলল, তোমার বংশীয় একজন নারী তোমার
বিবাহে আবদ্ধ ছিল, আমার বংশেও সে রূপ
বিবাহিতা নারী বিদ্যমান আছে, কিন্তু
আল্লাহর সিদ্ধান্তই সিদ্ধান্ত। তুমি আমার মালিক হয়েছ, এখন আল্লাহর নির্দেশ
মোতাবেক আমার সাথে ব্যবহার কর। হয়তো
ভালভাবে রাখ, নায়তো সুন্দরভাবে আমাকে বিদায় দাও। এটাই আমার কথা, আল্লাহর
নিকট তোমার ও আমার জন্য মাগফিরাত
কামনা করছি।”
শুরাই বলল, শাবি, সে মুহূর্তেও আমি মেয়েটির কারণে খুতবা দিতে বাধ্য হয়েছি। অতঃপর
আমি বললাম,
ﺪﻤﺤﻟﺍ ،ﻪﻠﻟ ﻩﺪﻤﺣﺃ ،ﻪﻨﻴﻌﺘﺳﺃﻭ
ﻲﻠﺻﺃﻭ ﻰﻠﻋ ﻲﺒﻨﻟﺍ ،ﻢﻠﺳﺃﻭ ﻪﻟﺁﻭ
ﺪﻌﺑﻭ…
তুমি এমন কিছু কথা বলেছ, যদি তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাক, তোমার কপাল ভাল। আর
যদি পরিত্যাগ কর, তোমার কপাল মন্দ।
আমার পছন্দ… আমার অপছন্দ… আমরা দু’জনে
একজন। আমার মধ্যে ভাল দেখলে প্রচার করবে, আর মন্দ কিছু দৃষ্টিগোচর হলে গোপন
রাখবে।
সে আরো কিছু কথা বলেছে, যা আমি ভুলে
গেছি। সে বলেছে, আমার আত্মীয় স্বজনের আসা-যাওয়া তুমি কোন দৃষ্টিতে দেখ? আমি
বললাম, ঘনঘন আসা-যাওয়ার মাধ্যমে বিরক্ত
করা পছন্দ করি না। সে বলল, তুমি পাড়া- প্রতিবেশীর মধ্যে যার ব্যাপারে অনুমতি
দেবে, তাকে আমি ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি
দেব। যার ব্যাপারে নিষেধ করবে, তাকে আমি অনুমতি দেব না। আমি বললাম, এরা ভাল, ওরা
ভাল না।
শুরাই বলল, শাবি, আমার জীবনের সব চেয়ে
আনন্দদায়ক অধ্যায় হচ্ছে, সে রাতের
মুহূর্তগুলো। পূর্ণ একটি বছর গত হল, আমি তার মধ্যে আপত্তিকর কিছু দেখিনি।
একদিনের ঘটনা, ‘দারুল কাজা’ থেকে বাড়ি
ফিরে দেখি, ঘরের ভেতর একজন মহিলা তাকে উপদেশ দিচ্ছে; আদেশ দিচ্ছে আর নিষেধ
করছে। আমি বললাম সে কে? বলল, তোমার শ্বশুর বাড়ির অমুক বৃদ্ধ। আমার অন্তরের
সন্দেহ দূর হল। আমি বসার পর, মহিলা আমার
সামনে এসে হাজির হল। বলল, আসসালামু আলাইকুম, আবু উমাইয়্যা। আমি বললাম, ওয়া
লাইকুমুসসালাম, আপনি কে? বলল, আমি অমুক;
তোমার শ্বশুর বাড়ির লোক। বললাম, আল্লাহ তোমাকে কবুল করুন। সে বলল, তোমার স্ত্রী
কেমন পেয়েছ? বললাম, খুব সুন্দর। বলল, আবু উমাইয়্যা, নারীরা দু’সময় অহংকারের শিকার
হয়। পুত্র সন্তান প্রসব করলে আর স্বামীর
কাছে খুব প্রিয় হলে। কোন ব্যাপারে তোমার সন্দেহ হলে লাঠি দিয়ে সোজা করে দেবে। মনে
রাখবে, পুরুষের ঘরে আহ্লাদি নারীর ন্যায় খারাপ আর কোন বস্তু নেই। বললাম, তুমি
তাকে সুন্দর আদব শিক্ষা দিয়েছ, ভাল জিনিসের অভ্যাস গড়ে দিয়েছ তার মধ্যে। সে
বলল, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের আসা-যাওয়া তোমার কেমন লাগে? বললাম, যখন ইচ্ছে তারা
আসতে পারে। শুরাই বলল, অতঃপর সে মহিলা
প্রতি বছর একবার করে আসত আর আমাকে উপদেশ দিয়ে যেত। সে মেয়েটি বিশ বছর
আমার সংসার করেছে, একবার ব্যতীত কখনো তিরস্কার করার প্রয়োজন হয়নি। তবে ভুল
সেবার আমারই ছিল।
ঘটনাটি এমন, ফজরের দু-রাকাত সুন্নত পড়ে আমি ঘরে বসে আছি, মুয়াজ্জিন একামত দিতে
শুরু করল। আমি তখন গ্রামের মসজিদের ইমাম। দেখলাম, একটা বিচ্ছু হাঁটাচলা করছে,
আমি একটা পাত্র উঠিয়ে তার উপর রেখে
দিলাম। বললাম, জয়নাব, আমার আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না। শাবি, তুমি যদি সে
মুহূর্তটা দেখতে! নামাজ শেষে ঘরে ফিরে
দেখি, বিচ্ছু সেখান থেকে বের হয়ে তাকে দংশন করেছে। আমি তৎক্ষণাৎ লবণ ও সাক্ত তলব
করে, তার আঙুলের উপর মালিশ করলাম।
সূরায়ে ফাতেহা, সূরায়ে নাস ও সূরায়ে ফালাক
পড়ে তার উপর দম করলাম।”[১৮]
দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীর কর্তব্য_______________
১. স্বামীর অসন্তুষ্টি থেকে বিরত থাকা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
“তিনজন ব্যক্তির নামাজ তাদের মাথার উপরে
উঠে না।
(ক). পলাতক গোলামের নামাজ, যতক্ষণ না সে
মনিবের নিকট ফিরে আসে।
(খ). সে নারীর নামাজ, যে নিজ স্বামীকে
রাগান্বিত রেখে রাত যাপন করে।
(গ). সে আমিরের নামাজ, যার উপর তার
অধীনরা অসন্তুষ্ট।”[১৯]
২. স্বামীকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
ইমাম আহমদ ও অন্যান্য মুহাদ্দিস বর্ণনা
করেন,
“দুনিয়াতে যে নারী তার স্বামীকে কষ্ট দেয়,
জান্নাতে তার হুরগণ (স্ত্রীগণ) সে নারীকে
লক্ষ্য করে বলে, তাকে কষ্ট দিয়ো না, আল্লাহ
তোমার সর্বনাশ করুন। সে তো তোমার কাছে
ক’দিনের মেহমান মাত্র, অতি শীঘ্রই
তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে।”[২০]
৩. স্বামীর অকৃতজ্ঞ না হওয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“আল্লাহ তা’আলা সে নারীর দিকে দৃষ্টি
দেবেন না, যে নিজ স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার
করে না, অথচ সে স্বামী ব্যতীত স্বয়ংসম্পূর্ণ
নয়।”[২১]
ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“আমি জাহান্নাম কয়েক বার দেখেছি, কিন্তু
আজকের ন্যায় ভয়ানক দৃশ্য আর কোন দিন দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশী
দেখেছি। তারা বলল, আল্লাহর রাসূল কেন?
তিনি বললেন, তাদের না শুকরির কারণে।
জিজ্ঞাসা করা হল, তারা কি আল্লাহর না
শুকরি করে? বললেন, না, তারা স্বামীর না
শুকরি করে, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না।
তুমি যদি তাদের কারো উপর যুগ-যুগ ধরে
ইহসান কর, অতঃপর কোন দিন তোমার কাছে
তার বাসনা পূণ না হলে সে বলবে, আজ পর্যন্ত
তোমার কাছে কোন কল্যাণই পেলাম না।”[২২]
৪. কারণ ছাড়া তালাক তলব না করা।
ইমাম তিরমিজি, আবু দাউদ প্রমুখগণ সওবান
রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
“যে নারী কোন কারণ ছাড়া স্বামীর কাছে
তালাক তলব করল, তার উপর জান্নাতের ঘ্রাণ
পর্যন্ত হারাম।”
৫. অবৈধ ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য না করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“আল্লাহর অবাধ্যতায় মানুষের আনুগত্য করা
যাবে না।”[২৩]
এখানে নারীদের শয়তানের একটি ধোঁকা থেকে
সতর্ক করছি, দোয়া করি আল্লাহ তাদের সুপথ
দান করুন। কারণ দেখা যায় স্বামী যখন তাকে
কোন জিনিসের হুকুম করে, সে এ হাদিসের
দোহাই দিয়ে বলে এটা হারাম, এটা নাজায়েজ,
এটা জরুরি নয়। উদ্দেশ্য স্বামীর নির্দেশ
উপেক্ষা করা। আমি তাদেরকে আল্লাহর
নিম্নোক্ত বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি,
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করেছে,
কিয়ামতের দিন তাদের চেহারা কালো
দেখবেন।”[২৪]
হাসান বসরি রহ. বলেন, “হালাল ও হারামের
ব্যাপারে আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর মিথ্যা
বলা নিরেট কুফরি।”
৬. স্বামীর বর্তমানে তার অনুমতি ব্যতীত
রোজা না রাখা।
সহিহ মুসলিমে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, “কোন নারী স্বামীর উপস্থিতিতে
তার অনুমতি ব্যতীত রোজা রাখবে না।”[২৫]
যেহেতু স্ত্রীর রোজার কারণে স্বামী নিজ
প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে, যা
কখনো গুনার কারণ হতে পারে। এখানে রোজা
দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই নফল রোজা উদ্দেশ্য।
কারণ ফরজ রোজা আল্লাহর অধিকার,
আল্লাহর অধিকার স্বামীর অধিকারের চেয়ে
বড়।
৭. স্বামীর ডাকে সাড়া না দেওয়া :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“কোন পুরুষ যখন তার স্ত্রীকে নিজের
বিছানায় ডাকে, আর স্ত্রী তার ডাকে সাড়া না
দেয়, এভাবেই স্বামী রাত যাপন করে, সে
স্ত্রীর উপর ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত
অভিসম্পাত করে।”[২৬]
৮. স্বামী-স্ত্রীর একান্ত গোপনীয়তা
প্রকাশ না করা :
আসমা বিনতে ইয়াজিদ থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“কিছু পুরুষ আছে যারা নিজ স্ত্রীর সাথে কৃত
আচরণের কথা বলে বেড়ায়, তদ্রুপ কিছু নারীও
আছে যারা আপন স্বামীর গোপন ব্যাপারগুলো
প্রচার করে বেড়ায়?! এ কথা শুনে সবাই চুপ
হয়ে গেল, কেউ কোন শব্দ করল না। আমি
বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! নারী-
পুরুষেরা এমন করে থাকে। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এমন করো না। এটা তো শয়তানের মতো যে
রাস্তার মাঝে নারী শয়তানের সাক্ষাৎ পেল,
আর অমনি তাকে জড়িয়ে ধরল, এদিকে লোকজন
তাদের দিকে তাকিয়ে আছে!”[২৭]
৯. স্বামীর ঘর ছাড়া অন্য কোথাও বিবস্ত্র
না হওয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
যে নারী স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও
বিবস্ত্র হল, আল্লাহ তার গোপনীয়তা নষ্ট
করে দেবেন।”[২৮]
১০. স্বামীর অনুমতি ব্যতীত কাউকে তার
ঘরে ঢুকতে না দেয়া।
বুখারিতে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“নারী তার স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমিত
ছাড়া রোজা রাখবে না এবং তার অনুমতি ছাড়া
তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না।”[২৯]
১১. স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের না
হওয়া।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “তোমরা ঘরে অবস্থান
কর” ইবনে কাসির রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন,
“তোমরা ঘরকে আঁকড়িয়ে ধর, কোন প্রয়োজন
ছাড়া ঘর থেকে বের হয়ো না।”[৩০]
নারীর
জন্য স্বামীর আনুগত্য যেমন ওয়াজিব, তেমন
ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য তার অনুমতি ওয়াজিব। স্বামীর খেদমতের উদাহরণ:
মুসলিম বোন! স্বামীর খেদমতের ব্যাপারে
একজন সাহাবির স্ত্রীর একটি ঘটনার উল্লেখ যথেষ্ট হবে বলে আমার ধারণা। তারা
কীভাবে স্বামীর খেদমত করেছেন, স্বামীর
কাজে সহযোগিতার স্বাক্ষর রেখেছেন- ইত্যাদি বিষয় বুঝার জন্য দীর্ঘ
উপস্থাপনার পরিবর্তে একটি উদাহরণই যথেষ্ট হবে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আসমা বিনতে আবু বকর থেকে সহিহ মুসলিমে
বর্ণিত, তিনি বলেন, জুবায়ের আমাকে যখন বিয়ে করে, দুনিয়াতে তখন তার ব্যবহারের
ঘোড়া ব্যতীত ধন-সম্পদ বলতে আর কিছু ছিল
না। তিনি বলেন, আমি তার ঘোড়ার ঘাস সংগ্রহ করতাম, ঘোড়া মাঠে চরাতাম, পানি
পান করানোর জন্য খেজুর আঁটি পিষতাম,
পানি পান করাতাম, পানির বালতিতে দানা ভিজাতাম। তার সব কাজ আমি নিজেই আঞ্জাম
দিতাম। আমি ভাল করে রুটি বানাতে জানতাম
না, আনসারদের কিছু মেয়েরা আমাকে এ জন্য সাহায্য করত। তারা আমার প্রকৃত বান্ধবী
ছিল। সে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দান করা জুবায়েরের
জমি থেকে মাথায় করে শস্য আনতাম, যা প্রায়
এক মাইল দূরত্বে ছিল।” [৩১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
যদি নারীরা পুরুষের অধিকার সম্পর্কে
জানত, দুপুর কিংবা রাতের খাবারের সময় হলে,
তাদের খানা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নিত
না।”[৩২]
বিয়ের পর মেয়েকে উদ্দেশ্য করে উম্মে
আকেলার উপদেশ:_______________-
আদরের মেয়ে, যেখানে তুমি
বড় হয়েছ, যারা তোমার আপন জন ছিল, তাদের
ছেড়ে একজন অপরিচিত লোকের কাছে যাচ্ছ,
যার স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে তুমি কিছু জান
না। তুমি যদি তার দাসী হতে পার, সে তোমার
দাস হবে। আর দশটি বিষয়ের প্রতি খুব নজর
রাখবে।
১-২. অল্পতে তুষ্টি থাকবে। তার তার
অনুসরণ করবে ও তার সাথে বিনয়ী থাকবে।
৩-৪. তার চোখ ও নাকের আবেদন পূর্ণ করবে।
তার অপছন্দ হালতে থাকবে না, তার অপ্রিয়
গন্ধ শরীরে রাখবে না।
৫-৬. তার ঘুম ও খাবারের প্রতি সজাগ দৃষ্টি
রাখবে। মনে রাখবে, ক্ষুধার তাড়নায় গোস্বার
উদ্রেক হয়, ঘুমের স্বল্পতার কারণে
বিষণ্নতার সৃষ্টি হয়।
৭-৮. তার সম্পদ হেফাজত করবে, তার সন্তান
ও বৃদ্ধ আত্মীয়দের সেবা করবে। মনে রাখবে,
সব কিছুর মূল হচ্ছে সম্পদের সঠিক ব্যবহার,
সন্তানদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা।
পুরুষদের উদ্দেশে দুটি কথা____________
উপরের বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা আল্লাহ
তাআলার কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের আলোকে
মুসলমান বোনদের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করার চেষ্টা করেছি
মাত্র। তবে এর অর্থ এ নয় যে, কোন স্ত্রী
এ সবগুণের বিপরীত করলে, তাকে শান্তি দেওয়া স্বামীর জন্য হালাল হয়ে যায়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,____________
“কোন মোমিন ব্যক্তি কোন মোমিন নারীকে
বিবাহ বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন করবে না, তার
একটি অভ্যাস মন্দ হলে, অপর আচরণে তার
উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবে।”[৩৩]
তুমি যদি স্ত্রীর বিরুদ্ধাচরণ অথবা তার
কোন মন্দ স্বভাব প্রত্যক্ষ কর, তবে তোমার
সর্বপ্রথম দায়িত্ব তাকে উপদেশ দেয়া,
নসিহত করা, আল্লাহ এবং তার শাস্তির কথা
স্মরণ করিয়ে দেয়া। তার পরেও যদি সে
অনুগত না হয়, বদ অভ্যাস ত্যাগ না করে, তবে
প্রাথমিক পর্যায়ে তার থেকে বিছানা আলাদা
করে নাও। খবরদার! ঘর থেকে বের করবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
“ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও স্ত্রীকে
পরিত্যাগ কর না।” এতে যদি সে শুধরে যায়,
ভাল। অন্যথায় তাকে আবার নসিহত কর, তার
থেকে বিছানা আলাদা কর।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“যে নারীদের নাফরমানির আশঙ্কা কর,
তাদের উপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর,
প্রহার কর, যদি তোমাদের আনুগত্য করে, তবে
অন্য কোন পথ অনুসন্ধান কর না।”[৩৪]
“তাদের প্রহার কর” এর ব্যাখ্যায় ইবনে
কাসির রহ. বলেন, যদি তাদের উপদেশ দেওয়া
ও তাদের থেকে বিছানা আলাদা করার পরও
তারা নিজ অবস্থান থেকে সরে না আসে, তখন
তোমাদের অধিকার রয়েছে তাদের হালকা
প্রহার করা, যেন শরীরের কোন স্থানে দাগ
না পড়ে।
জাবের রাদিআল্লাহ আনহু থেকে সহিহ
মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজে বলেছেন,“তোমরা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর,
তারা তোমাদের কাছে মাঝামাঝি অবস্থানে
রয়েছে। তোমরা তাদের মালিক নও, আবার তারা তোমাদের থেকে মুক্তও নয়। তাদের
কর্তব্য, তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে জায়গা না দেয়া, যাদের তোমরা অপছন্দ কর।
যদি এর বিপরীত করে, এমনভাবে তাদের
প্রহার কর, যাতে শরীরের কোন স্থানে দাগ না পড়ে। তোমাদের কর্তব্য সাধ্য মোতাবেক
তাদের ভরন-পোষণের ব্যবস্থা করা।”
প্রহারের সংজ্ঞায় ইবনে আব্বাস ও অন্যান্য মুফাসসির দাগ বিহীন প্রহার বলেছেন।
হাসান বসরিও তাই বলেছেন। অর্থাৎ যে
প্রহারের কারণে শরীরে দাগ পড়ে না।”[৩৫]
চেহারাতে প্রহার করবে না।
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
চেহারায় আঘাত করবে না।
স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার
স্বামী যেমন কামনা করে, স্ত্রী তার সব
দায়িত্ব পালন করবে, তার সব হক আদায় করবে,
তদ্রুপ স্ত্রীও কামনা করে। তাই স্বামীর
কর্তব্য স্ত্রীর সব হক আদায় করা, তাকে কষ্ট
না দেয়া, তার অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন
আচরণ থেকে বিরত থাকা।
মুসনাদে আহমদে বর্ণিত,
হাকিম বিন মুয়াবিয়া তার পিতা থেকে বর্ণনা
করেন, আমি বললাম, “আল্লাহর রাসূল, আমাদের
উপর স্ত্রীদের কী কী অধিকার রয়েছে?
তিনি বললেন, তুমি যখন খাবে, তাকেও খেতে
দেবে। যখন তুমি পরিধান করবে, তাকেও
পরিধান করতে দেবে। চেহারায় প্রহার করবে
না। নিজ ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও তার
বিছানা আলাদা করে দেবে না।” অন্য বর্ণনায়
আছে, “তার শ্রী বিনষ্ট করিও না।”[৩৬]
বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য হাদিসের
কিতাবে
আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, “হে আব্দুল্লাহ, আমি জানতে পারলাম,
তুমি দিনে রোজা রাখ, রাতে নামাজ পড়, এ
খবর কি ঠিক? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর
রাসূল। তিনি বলেন, এমন কর না। রোজা
রাখ, রোজা ভাঙ্গো। নামাজ পড়, ঘুমাও। কারণ
তোমার উপর শরীরের হক রয়েছে, চোখের হক
রয়েছে, স্ত্রীরও হক রয়েছে।”[৩৭]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আরো বলেছেন,
যার দু’জন স্ত্রী রয়েছে, আর সে একজনের
প্রতি বেশি ঝুঁকে গেল, কিয়ামতের দিন সে
একপাশে কাত অবস্থায় উপস্থিত হবে।”[৩৮]
সম্মানিত পাঠক! আমাদের আলোচনা সংক্ষেপ
হলেও তার আবেদন কিন্তু ব্যাপক।
এখন আমরা
আল্লাহর দরবারে তার সুন্দর সুন্দর নাম,
মহিমান্বিত গুণসমূহের ওসিলা দিয়ে
প্রার্থনা করি, তিনি আমাকে এবং সমস্ত
মুসলমান ভাই-বোনকে এ কিতাব দ্বারা উপকৃত
হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমরা এমন না
হয়ে যাই, যারা নিজ দায়িত্ব আদায় না করে,
স্ত্রীর হক উশুল করতে চায়।
আমাদের
উদ্দেশ্য কারো অনিয়মকে সমর্থন না করা
এবং এক পক্ষের অপরাধের ফলে অপর পক্ষের
অপরাধকে বৈধতা না দেয়া। বরং আমাদের
উদ্দেশ্য প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্বের
ব্যাপারে আল্লাহর সামনে জবাবদিহির জন্য
সচেতন করা।
পরিসমাপ্তি
পরিশেষে স্বামীদের উদ্দেশে বলি, আপনারা
নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন, তাদের
কল্যাণকামী হোন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
“তোমরা নারীদের কল্যাণকামী হও। কারণ,
তাদের পাঁজরের হাড্ডি দ্বারা সৃষ্টি করা
হয়েছে, পাঁজরের হাড্ডির ভেতর উপরেরটি
সবচে’ বেশি বাঁকা। (যার মাধ্যমে তাদের
সৃষ্টি করা হয়েছে।) যদি সোজা করতে চাও,
ভেঙে ফেলবে। আর রেখে দিলেও তার বক্রতা দূর
হবে না, তোমরা নারীদের কল্যাণকামী হও।
“[৩৯]
নারীদের সাথে কল্যাণ কামনার অর্থ, তাদের
সাথে উত্তম ব্যবহার করা, ইসলাম শিক্ষা
দেয়া, এ জন্য ধৈর্য ধারণ করা; আল্লাহ এবং
তাঁর রাসূলের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া,
হারাম জিনিস থেকে বিরত থাকার উপদেশ
দেয়া।
আশা করি, এ পদ্ধতির ফলে তাদের
জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হবে। দরুদ ও
সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ও তার বংশধরের উপর। আমাদের
সর্বশেষ কথা, “আল্লাহর জন্য সমস্ত
প্রশংসা। তিনি দু-জাহানের পালনকর্তা।”
মুসলিম নারীর পর্দার জরুরি শর্তসমূহ
১. সমস্ত শরীর ঢাকা :
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ْﻞُﻗَﻭ ِﺕﺎَﻨِﻣْﺆُﻤْﻠِﻟ َﻦْﻀُﻀْﻐَﻳ َّﻦِﻫِﺭﺎَﺼْﺑَﺃ ْﻦِﻣ
َّﻦُﻬَﺟﻭُﺮُﻓ َﻦْﻈَﻔْﺤَﻳَﻭ ﺎَﻟَﻭ َّﻦُﻬَﺘَﻨﻳِﺯ َﻦﻳِﺪْﺒُﻳ
ﺎَّﻟِﺇ ﺎَﻣ َﺮَﻬَﻇ َّﻦِﻫِﺮُﻤُﺨِﺑ َﻦْﺑِﺮْﻀَﻴْﻟَﻭ ﺎَﻬْﻨِﻣ
َّﻦِﻬِﺑﻮُﻴُﺟ ﻰَﻠَﻋ ﺎَﻟَﻭ َّﻦُﻬَﺘَﻨﻳِﺯ َﻦﻳِﺪْﺒُﻳ ﺎَّﻟِﺇ
َّﻦِﻬِﺘَﻟﻮُﻌُﺒِﻟ ْﻭَﺃ َّﻦِﻬِﺋﺎَﺑَﺁ ْﻭَﺃ ِﺀﺎَﺑَﺁ
َّﻦِﻬِﺘَﻟﻮُﻌُﺑ َّﻦِﻬِﺋﺎَﻨْﺑَﺃ ْﻭَﺃ ْﻭَﺃ ِﺀﺎَﻨْﺑَﺃ
َّﻦِﻬِﺘَﻟﻮُﻌُﺑ َّﻦِﻬِﻧﺍَﻮْﺧِﺇ ْﻭَﺃ ْﻭَﺃ ﻲِﻨَﺑ
َّﻦِﻬِﻧﺍَﻮْﺧِﺇ ْﻭَﺃ َّﻦِﻬِﺗﺍَﻮَﺧَﺃ ﻲِﻨَﺑ ْﻭَﺃ
َّﻦِﻬِﺋﺎَﺴِﻧ ْﻭَﺃ ﺎَﻣ َّﻦُﻬُﻧﺎَﻤْﻳَﺃ ْﺖَﻜَﻠَﻣ ِﻭَﺃ
َﻦﻴِﻌِﺑﺎَّﺘﻟﺍ ِﺮْﻴَﻏ ِﺔَﺑْﺭِﺈْﻟﺍ ﻲِﻟﻭُﺃ َﻦِﻣ
ِﻝﺎَﺟِّﺮﻟﺍ ِﻭَﺃ َﻦﻳِﺬَّﻟﺍ ِﻞْﻔِّﻄﻟﺍ ﺍﻭُﺮَﻬْﻈَﻳ ْﻢَﻟ
ِﺕﺍَﺭْﻮَﻋ ﻰَﻠَﻋ ِﺀﺎَﺴِّﻨﻟﺍ َﻦْﺑِﺮْﻀَﻳ ﺎَﻟَﻭ
َﻢَﻠْﻌُﻴِﻟ َّﻦِﻬِﻠُﺟْﺭَﺄِﺑ َﻦﻴِﻔْﺨُﻳ ﺎَﻣ ْﻦِﻣ
ﺍﻮُﺑﻮُﺗَﻭ َّﻦِﻬِﺘَﻨﻳِﺯ ﻰَﻟِﺇ ِﻪَّﻠﻟﺍ ﺎًﻌﻴِﻤَﺟ
ﺎَﻬُّﻳَﺃ َﻥﻮُﻨِﻣْﺆُﻤْﻟﺍ َﻥﻮُﺤِﻠْﻔُﺗ ْﻢُﻜَّﻠَﻌَﻟ ﴿৩১
﴾( ﺭﻮﻨﻟﺍ-৩১)
“আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের
দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের
হেফাজত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায়
তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে
না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে
ঢেকে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী,
পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে,
ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন
নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে,
অধীন যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের
গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো
কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর
তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ
করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে
মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট
তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
“[৪০]
অন্যত্র বলেন,
ﺎَﻳ ُّﻲِﺒَّﻨﻟﺍ ﺎَﻬُّﻳَﺃ ْﻞُﻗ َﻚِﺗﺎَﻨَﺑَﻭ َﻚِﺟﺍَﻭْﺯَﺄِﻟ
ِﺀﺎَﺴِﻧَﻭ َﻦﻴِﻧْﺪُﻳ َﻦﻴِﻨِﻣْﺆُﻤْﻟﺍ َّﻦِﻬْﻴَﻠَﻋ ْﻦِﻣ
َّﻦِﻬِﺒﻴِﺑﺎَﻠَﺟ َﻚِﻟَﺫ ﻰَﻧْﺩَﺃ ْﻥَﺃ َﻦْﻓَﺮْﻌُﻳ ﺎَﻠَﻓ
َﻥﺎَﻛَﻭ َﻦْﻳَﺫْﺆُﻳ ُﻪَّﻠﻟﺍ ﺎًﻤﻴِﺣَﺭ ﺍًﺭﻮُﻔَﻏ ﴿
৫৯﴾
“হে নবি, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে,
কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বল, ‘তারা
যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজদের
উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে
এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে
তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ
অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[৪১]
২. কারুকার্য ও নকশা বিহীন পর্দা ব্যবহার
করা :
তার প্রমাণ পূর্বে বর্ণিত সূরা নুরের আয়াত-
ﺎَﻟَﻭ َﻦﻳِﺪْﺒُﻳ َّﻦُﻬَﺘَﻨﻳِﺯ “তারা স্বীয় রূপ-
লাবণ্য ও সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না।” এ
আয়াতের ভেতর কারুকার্য খচিত পর্দাও
অন্তর্ভুক্ত। কারণ আল্লাহ তাআলা যে
সৌন্দর্য প্রকাশ করতে বারণ করেছেন, সে
সৌন্দর্যকে আরেকটি সৌন্দর্য দ্বারা আবৃত
করাও নিষেধের আওতায় আসে। তদ্রুপ সে সকল
নকশাও নিষিদ্ধ, যা পর্দার বিভিন্ন
জায়গায় অঙ্কিত থাকে বা নারীরা মাথার উপর
আলাদাভাবে বা শরীরের কোন জায়গায় যুক্ত
করে রাখে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
َﻥْﺮَﻗَﻭ َّﻦُﻜِﺗﻮُﻴُﺑ ﻲِﻓ ﺎَﻟَﻭ َﺝُّﺮَﺒَﺗ َﻦْﺟَّﺮَﺒَﺗ
ِﺔَّﻴِﻠِﻫﺎَﺠْﻟﺍ ﻰَﻟﻭُﺄْﻟﺍ ﴿৩৩﴾ (
ﺏﺍﺰﺣﻷﺍ-৩৩)
“আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং
প্রাক- জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন
করো না।”[৪২]
ﺝﺮﺒﺘﻟﺍ অর্থ: নারীর এমন সৌন্দর্য ও
রূপ-লাবণ্য প্রকাশ করা, যা পুরুষের যৌন
উত্তেজনা ও সুড়সুড়ি সৃষ্টি করে। এ রূপ
অশ্লীলতা প্রদর্শন করা কবিরা গুনা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
“তিনজন মানুষ সম্পর্কে তোমরা আমাকে
জিজ্ঞাসা কর না। (অর্থাৎ তারা সবাই ধ্বংস
হবে।) যথা :
ক. যে ব্যক্তি মুসলমানদের জামাত থেকে বের
হয়ে গেল অথবা যে কুরআন অনুযায়ী দেশ
পরিচালনকারী শাসকের আনুগত্য ত্যাগ করল,
আর সে এ অবস্থায় মারা গেল।
খ. যে গোলাম বা দাসী নিজ মনিব থেকে
পলায়ন করল এবং এ অবস্থায় সে মারা গেল।
গ. যে নারী প্রয়োজন ছাড়া রূপচর্চা করে
স্বামীর অবর্তমানে বাইরে বের হল।”[৪৩]
৩. পর্দা সুগন্ধি বিহীন হওয়া :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে প্রচুর হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যার
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সুগন্ধি ব্যবহার
করে নারীদের বাইরে বের হওয়া হারাম।
সংক্ষিপ্ততার জন্য আমরা এখানে উদাহরণ
স্বরূপ, রাসূলের একটি হাদিস উল্লেখ করছি,
তিনি বলেন,
“যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে বের
হল, অতঃপর কোন জনসমাবেশ দিয়ে অতিক্রম
করল তাদের ঘ্রাণে মোহিত করার জন্য, সে
নারী ব্যভিচারিণী।”[৪৪]
৪. শীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেসে উঠে এমন
পাতলা ও সংকীর্ণ পর্দা না হওয়া।
ইমাম আহমদ রহ. উসামা বিন জায়েদের সূত্রে
বর্ণনা করেন,
“দিহইয়া কালবির উপহার দেয়া, ঘন বুননের
একটি কিবতি কাপড় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পরিধান করতে
দেন। আমি তা আমার স্ত্রীকে দিয়ে দেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একদিন আমাকে বলেন, কি ব্যাপার, কাপড়
পরিধান কর না? আমি বললাম, আল্লাহর
রাসূল, আমি তা আমার স্ত্রীকে দিয়েছি।
তিনি বললেন, তাকে বল, এর নীচে যেন সে
সেমিজ ব্যবহার করে। আমার মনে হয়, এ
কাপড় তার হাড়ের আকারও প্রকাশ করে দেবে।
“[৪৫]
৫. পর্দা শরীরের রং প্রকাশ করে দেয় এমন
পাতলা না হওয়া।
সহিহ মুসলিমে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
জাহান্নামের দু’ প্রকার লোক আমি এখনো
দেখিনি :
(ক). সে সব লোক যারা গরুর লেজের মত বেত
বহন করে চলবে, আর মানুষদের প্রহার করবে।
(খ). সে সব নারী, যারা কাপড় পরিধান করেও
বিবস্ত্র থাকবে, অন্যদের আকৃষ্ট করবে এবং
তারা নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা হবে
ঘোড়ার ঝুলন্ত চুটির মত। তারা জান্নাতে
প্রবেশ করবে না, তার ঘ্রাণও পাবে না।
৬. নারীর পর্দা পুরুষের পোশাকের ন্যায় না
হওয়া।
ইমাম বুখারি ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা
করেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারী নারী
এবং নারীদের সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষের
উপর অভিসম্পাত করেছেন।”[৪৬]
৭. সুখ্যাতির জন্য পরিধান করা হয় বা
মানুষ যার প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করে, পর্দা
এমন কাপড়ের না হওয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন
“যে ব্যক্তি সুনাম সুখ্যাতির পোশাক
পরিধান করবে, আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন
অনুরূপ কাপড় পরিধান করাবেন, অতঃপর
জাহান্নামের লেলিহান আগুনে তাকে দগ্ধ
করবেন।”
সুনাম সুখ্যাতির কাপড়, অর্থাৎ যে কাপড়
পরিধান করার দ্বারা মানুষের মাঝে
প্রসিদ্ধি লাভ উদ্দেশ্য হয়। যেমন উৎকৃষ্ট
ও দামি কাপড়। যা সাধারণত দুনিয়ার সুখ-
ভোগ ও চাকচিক্যে গর্বিত-অহংকারী
ব্যক্তিরাই পরিধান করে। এ হুকুম নারী-
পুরুষ সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যে কেউ এ
ধরনের কাপড় অসৎ উদ্দেশ্যে পরিধান করবে,
কঠোর হুমকির সম্মুখীন হবে, যদি তওবা না
করে মারা যায়।
৮. পর্দা বিজাতীয়দের পোশাক সাদৃশ্য না
হওয়া।
ইবনে ওমর রাদিআল্লাহ আনহু থেকে আবু দাউদ
ও অন্যান্য মুহাদ্দিসিনগণ বর্ণনা করেন,
“যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে মিল
রাখল, সে ওই সম্প্রদায়ের লোক হিসেবে
গণ্য।” এরশাদ হচ্ছে,
ْﻢَﻟَﺃ َﻦﻳِﺬَّﻠِﻟ ِﻥْﺄَﻳ ﺍﻮُﻨَﻣَﺁ ْﻥَﺃ َﻊَﺸْﺨَﺗ
ْﻢُﻬُﺑﻮُﻠُﻗ ِﺮْﻛِﺬِﻟ ِﻪَّﻠﻟﺍ ﺎَﻣَﻭ َﻝَﺰَﻧ َﻦِﻣ ِّﻖَﺤْﻟﺍ
َﻦﻳِﺬَّﻟﺎَﻛ ﺍﻮُﻧﻮُﻜَﻳ ﺎَﻟَﻭ َﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ﺍﻮُﺗﻭُﺃ
ْﻦِﻣ ُﻞْﺒَﻗ ﴿১৬﴾ ( ﺪﻳﺪﺤﻟﺍ:১৬)
“যারা ঈমান এনেছে তাদের হৃদয় কি আল্লাহর
স্মরণে এবং যে সত্য নাজিল হয়েছে, তার
কারণে বিগলিত হওয়ার সময় হয়নি? আর
তারা যেন তাদের মত না হয়, যাদেরকে
ইতঃপূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল।”[৪৭]
ইবনে কাসির অত্র আয়াতের তাফসিরে বলেন,
“এ জন্য আল্লাহ তাআলা মোমিনদেরকে
মৌলিক কিংবা আনুষঙ্গিক যে কোন বিষয়ে
তাদের সামঞ্জস্য পরিহার করতে বলেছেন।
ইবনে তাইমিয়্যাও অনুরূপ বলেছেন। অর্থাৎ
অত্র আয়াতে নিষেধাজ্ঞার পরিধি ব্যাপক ও
সব ক্ষেত্রে সমান, কাফেরদের অনুসরণ করা
যাবে না।”[৪৮]
সমাপ্ত
_________________________________________
_________________________________________ _____
[১] আহযাব:৩৬[২] বুখারী
[৩] নিসা : ৩৪
[৪] ইবনে কাসির : ১/৭২১
[৫] সহিহ আল-জামে আল-সাগির : ৫২৯৫
[৬] নিসা : ৩৪
[৭] ফতওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ : ৩২/২৭৫
[৮] মুসলিম
[৯] মুসলিম : ১০/৩০৫
[১০] হাকেম, সহিহ আল-জামে : ৮৮৭
[১১] দারে কুতনি
[১২] ইবনে কাসির : ১ : ৭৪৩
[১৩] ইবনে হিব্বান, সহিহ আল-জামে : ৬৬০
[১৪] আলবানির সহিহ হাদীস সংকলন : ২৮৭
[১৫] সহিহ সুনানে নাসায়ী : ৩০৩০
[১৬] আহমাদ : ৪ : ৩৪১
[১৭] ইবনে হিব্বান, আল-জামে : ৬৬০
[১৮] ইবনে আবদে রব্বিহি আন্দালুসি রচিত :
তাবায়েউন্নিসা নামক গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
[১৯] তিরমিজি : ২৯৫
[২০] আহমদ, তিরমিজি, সহিহ আল-জামে :
৭১৯২
[২১] নাসায়ী
[২২] মুসলিম : ৬ : ৪৬৫
[২৩] আহমদ, হাকেম, সহিহ আল-জামে : ৭৫২০
[২৪] জুমার : ৬০
[২৫] মুসলিম : ৭ : ১২০
[২৬] মুসলিম : ১০ : ২৫৯
[২৭] ইমাম আহমদ
[২৮] ইমাম আহমদ, সহিহ আল-জামে : ৭
[২৯] ফতাহুল বারি : ৯ : ২৯৫
[৩০] ইবনে কাসির : ৩ : ৭৬৮
[৩১] মুসলিম : ২১৮২
[৩২] তাবরানি, সহিহ আল-জামে : ৫২৫৯
[৩৩] মুসলিম : ১০:৩১২
[৩৪] নিসা : ৩৪
[৩৫] ইবনে কাসির : ১ : ৭৪৩
[৩৬] মুসনাদে আহমদ : ৫ : ৩
[৩৭] ফাতহুল বারি : ৯ : ২৯৯
[৩৮] আবু দাউদ, তিরমিজি
[৩৯] বর্ণনায় বুখারী, মুসলিম, বায়হাকি ও
আরো অনেকে
[৪০] নূর : ৩১
[৪১] আহজাব : ৫৯
[৪২] আহজাব : ৩৩
[৪৩] হাকেম, সহিহ আল-জামে : ৩০৫৮
[৪৪] আহমদ, সহিহ আল-জামে : ২৭০১
[৪৫] আহমদ, বায়হাকি
[৪৬] বুখারী, ফাতহুল বারি : ১০ : ৩৩২
[৪৭] হাদিদ : ১৬
[৪৮] ইবনে কাসির : ৪ : ৪৮৪
_________________________________________
________________________________________