Monday, 25 June 2018

রুপ চর্চায় মসুর ডাল ----- মসুর ডাল ও মধুর প্যাক:মসুর ডাল, টক দই আর বেসনের উপটান:দুধ ও মসুর ডালের এক্সফলিয়েটরমসুর ডালের হেয়ার রিমুভাল প্যাক: : মসুর ডাল, লেবু, চিনির প্যাক:মসুর ডাল ও গাঁদা ফুলের প্যাক:

প্রায় ৮০০০ বছর আগে থেকেই মধ্য এশিয়ার বাসিন্দারা মসুর ডাল খাওয়া শুরু

 করেছিলেন। কারণ সেই সময়ই তারা বুঝে গিয়েছিল যে প্রাকৃতিক উপাদানটি

 কাজে লাগিয়ে শরীরকে চাঙ্গা রাখা সম্ভব।

মসুর ডাল একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ ডাল। প্রাচীন কাল থেকে মসুর ডাল তাই 
খাবারের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
একটা সময় আমাদের দাদি নানিরা এই ডাল দিয়েই সারতেন তাদের রুপচর্চা। 
আর তাদের স্কিন ও ছিল কিন্তু দেখার মতন। কারণ তারা আমাদের মতো এটা
 সেটা আর কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতেন না। তারা প্রাকৃতিক 
উপাদানগুলোকে বেছে নিয়ে ছিলেন তাদের টানটান উজ্জ্বল ত্বকের হাতিয়ার হিসেবে।
নিয়মিত মসুর ডাল দিয়ে বানানো ফেস মাস্ক মুখে লাগাতে শুরু করলে ত্বকের 
ভেতরের প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়। ফলে স্কিনের ডালনেস কমতে শুরু করে। 
সেই সঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠতেও সময় লাগে না।

মসুর ডাল আরো নানাভাবে ত্বকের উপকারে লেগে থাকে।

 যেমন- মসুর ডাল 
দিয়ে বানানো প্যাক মুখে লাগাতে শুরু করলে স্কিনের উপরিঅংশে 
জমে থাকা মৃত 
কোষের স্তর সরে যায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে,
 সেই সঙ্গে 
বলিরেখা কমে, কালো ছোপ ছোপ দাগ কমতে শুরু করে এবং মুখের উপর থাকা 
অতিরিক্ত চুল ঝরে যায়।
মসুরেরর ডালে থাকা প্রোটিন এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান ষখন ত্বকের
 ভেতরে প্রবেশ করে, তখন এমন কারিশমা দেখায় যে ত্বকের টোনই বদলে 
যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ত্বক এমন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে 
যে সৌন্দর্য আকাশ ছুঁতে সময় লাগে না।

ব্যাবহার বিধি -----------------

মসুর ডালের যেকোনো প্যাক বানানোর আগে অবশ্যই ডাল সারারাত 
ভিজিয়ে বেটে নিতে হবে অথবা ডাল গুড়ো করে নিতে হবে

(১) মসুর ডাল ও মধুর প্যাক:
আমাদের মধ্যে যাদের স্কিন ড্রাই মসুর ডাল তাদের জন্য হতে পারে
 দারুণ একটা সমাধান। মসুর ডাল আর মধু স্কিনের মৃতকোষ দূর 
করে স্কিনে সফটনেস আনবে খুব এফেক্টিভভাবে। মধু আর মসুর ডাল 
এই উভয় উপাদান স্কিনের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দারুন কাজ করে। ফলে স্কিনের 
মসৃণতা বাড়ার সাথে সাথে উজ্জ্বলতাও বাড়বে। এর জন্য যা করতে হবে-
> এক চা চামচ মধু আর এক চা চামচ মসুর ডাল বাটা মিশিয়ে পরিস্কার 
মুখে লাগাতে হবে।
> ১৫ মিনিট পরে হালকা হাতে ঘষেঘষে তুলে ফেলতে হবে।
>তারপর পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

(২) মসুর ডাল, টক দই আর বেসনের উপটান:
যদি কেউ চায় ত্বকের রঙ ভীষনভাবে উজ্জ্বল করতে, 
কার্যকরভাবে ব্রণ ও সান ট্যান দূর করতে তাহলে এই উপটান 
তাদের জন্যই। সাথে সাথে এটি স্কিনকে করবে খুব স্মুদ এবং লাবন্যময়। 
এটি বানাতে যা করতে হবে হবে তা হল-
> সমপরিমান মসুর ডাল বাটা, টক দই আর বেসন এক সাথে মিশাতে হবে।
> এর সাথে নিতে হবে এক চিমটি হলুদ গুড়া।
> ভালো করে মিক্স করে মুখে অ্যাপ্লাই করতে হবে।
> একদম শুকিয়ে গেলে হাত পানিতে ভিজিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ
 করে তুলে ফেলে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
>এই প্যাকটি বডি ফেয়ারনেস বাড়াতেও সমানভাবে কাজ করে।

(৩) দুধ ও মসুর ডালের এক্সফলিয়েটর:
যারা সিম্পল কিন্তু কার্যকর এক্সফলিয়েশন পছন্দ করেন, মসুর ডাল তাদের জন্য
 দারুন এক উপাদান। মুখের মৃতকোষ সরিয়ে মুখের ত্বক উজ্জ্বল আর 
স্মুদ করতে মসুর ডালের জুড়ি মেলা ভার। সেই সাথে দুধের ল্যাকটিক 
এসিড ত্বককে করে কোমল ও ফর্সা।
> মসুর ডাল বেটে এর সাথে এক চা চামচ দুধ মিশিয়ে কোমল হাতে মুখে 
মুখে ঘষে ঘষে ম্যাসাজ করতে হবে ২/৩ মিনিট।
>এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ভালো করে। খেয়াল রাখবেন 
মুখে যেন একটুও লেগে না থাকে।
(৪) মসুর ডালের হেয়ার রিমুভাল প্যাক:
এই প্যাকটি একবারেই যে সব অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলবে তা নয় 
কিন্তু রেগুলার ব্যবহারে অবাঞ্ছিত লোমের গ্রোথ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে 
দিবে এবং মুখে থাকা অবশিষ্ট লোমগুলোকে একদম তুলে ফেলবে 
সেই সাথে ব্রণের দাগ হালকা করবে এবং ব্রাইটনেস বাড়াবে।
> এক চা চামচ মসুর ডাল বাটা, এক চা চামচ মিহি করা চালের গুড়া,
 এক চা চামচ বেসন আর ২/৩ ফোটা আমন্ড অয়েল এক সাথে 
মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে।
> মিনিট দশেক পরে শুকিয়ে আসলে আলতো করে ঘষেঘষে তুলে ফেলতে হবে।
>এই একই প্যাক বডির আনওয়ান্টেড হেয়ার রিমুভ করার 
কাজেও ব্যবহার করা যায়।

(৫)মসুর ডাল, লেবু, চিনির প্যাক:
লেবু ত্বকের কালো দাগ তুলতে খুবই কার্যকরি। ত্বকের উজ্জ্বলতা 
বৃদ্ধিতেও জুরি নেই। ১চামচ বেসন, ১চামচ লেবু, ১চামচ চিনি মিশিয়ে দারুণ 
একটি প্যাক তৈরি হয়। স্কিনের উজ্জ্বলতা খুব বেশি বেড়ে যায়। 
চিনি স্ক্রানিং এর কাজ ও করে এতে ত্বকের মড়া কোষ খুব সহজে দূর হয়ে যায়।

(৬) মসুর ডাল ও গাঁদা ফুলের প্যাক:
গাঁদাফুল আমাদের দেশে খুব সহজলভ্য একটি ফুল।
এটি শুধু যে বাগানের সৌন্দর্য্যই বাড়ায় তাই না সাথে সাথে এতে 
আছে স্কিনের যত্নের নানা উপাদান।
> মসুর ডাল বাটা ও গাঁদাফুল এর পাপড়ি বাটা এক সাথে মিশিয়ে মুখে লাগালে
 এটি স্কিনের ব্রাইটনেস বাড়াবে।
> যদি চান এর সাথে স্কিনে আসুক গোলাপি আভা তাহলে মিশিয়ে নিন 
এক চা চামচ গোলাপের পাপড়ি বাটা।
স্কিনের প্রেমে পড়ে যাবেন নির্ঘাত।
> সপ্তাহে ২-৩ দিন বেসনের যেকোনো একটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন,
 এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি ব্রণের সমস্যা থাকলেও তা 
দূর হয়ে যায়। নিজের স্কিনের পরিবর্তন নিজেই বুঝতে পারবেন। 
ত্বক ভালো তো মন ভালো।
_________________________________
ডেইলি বাংলাদেশ/আরএজে

No comments:

Post a Comment